ঢাকা   ২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
২০ নং ফোল্ডারের ১১ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তার বেহাল দশা দুর্গাপুরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার সাংবাদিক হবিগঞ্জ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বাবুলের রোগ মুক্তি কামনায় চুনারুঘাট উপজেলা ও পৌর যুবদলের দোয়া মাহফিল। হিন্দু থেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন একই পরিবারের- ০৪ জন দৈনিক রূপালী বাংলাদেশ” নতুন রূপে প্রকাশিত হওয়ায় চুনারুঘাটে কেক কাটা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত জৈন্তাপুর মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে শ্রেনী কক্ষের সংকট বিশালপুর ইউনিয়নের মৎস্যজীবী দলের কমিটি প্রকাশ কুষ্টিয়ায় দখলবা‌জি-চাঁদাবা‌জি নি‌য়ে জেলা বিএন‌পির ক‌ঠোর হুঁশিয়ারি নতুন দুই সভাপতি পেল ইবির দুই বিভাগ জকিগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ না করার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান ও মানববন্ধন

নওগাঁয় সরকারি চাকরি ছেড়ে দেশিয় মাছের ডিম থেকে রেনু উৎপাদন করে ভাগ্য বদলেছে পিয়াল হোসেনের

Dainik Muktir Songbad
  • প্রকাশিত : বুধবার, জুলাই ১৭, ২০২৪
  • 21 শেয়ার

উজ্জ্বল কুমার সরকার, নওগাঁ প্রতিনিধি: 

 

 

সরকারি চাকরি ছেড়ে দেশীয় মাছের ডিম থেকে রেণু উৎপাদন করে ভাগ্য বদলেছে পিয়াল হোসেন নামে এক যুবকের। শুরুতে এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করলেও এখন তার বছরে আয় ১ থেকে দেড় কোটি টাকা। শুধু নিজের ভাগ্য বদলই নয়, সেখানে সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থানের। এখন তিনি স্থানীয় যুবকদের কাছে আইকন হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন।

পিয়াল হোসেনের বাড়ি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার কাশিমালা গ্রামে। সেখানেই তিনি গড়ে তোলেছেন দেশীয় মাছের এই ডিমের হ্যাচারিজানা যায়, পড়াশোনা শেষ করে বগুড়া ফিসারিতে কেমিস্ট হিসেবে চাকরি শুরু করেন পিয়াল হোসেন। দু-বছর চাকরি করার পর কোনো উন্নতি দেখতে পান না তিনি। এরপর নিজেই কিছু করার চিন্তা ভাবনা থেকে চাকরি ছেড়ে ২০২০ সালে শুরু করেন মাছের হ্যাচারি খামার। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বছর বছর বাড়তে থাকে রেণুর চাহিদা। বর্তমানে তার এই হ্যাচারিতে দেশীয় শিং, মাগুর, টেংরা, গুলসা টেংরা, পাবদা, কৈ, তেলাপিয়া, পাঙ্গাসসহ কয়েক প্রজাতির মাছের রেণু উৎপাদন করা হয়। তিনি নিজেই মা মাছ থেকে ডিম, রেণু ফুটানোসহ সকল কাজ দক্ষতার সঙ্গে করেন। প্রতিবছর ১০ থেকে ১৫ কোটি রেণু উৎপাদন করে থাকেন এই হ্যাচারি থেকে। আর এসব রেণু পোনা সারাদেশে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও তার এই খামারে স্থানীয় শিক্ষার্থীসহ ১০ থেকে ১৫ জনের কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হয়েছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।সফল খামারি পিয়াল হোসেন ঢাকা মেইলকে বলেন, দুই বছর চাকরি করার পর দেখলাম যে; বেতন দিয়ে কোনো উন্নতি হচ্ছে না। তখন চিন্তা করি, নিজেই কিছু একটা করবো। সেই ভাবনা থেকেই এই মাছের হ্যাচারি স্থাপণ করি।

পিয়াল হোসেন বলেন, শুরুতে এনজিও থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে যখন শুরু করলাম তখন অনেকে অনেক কটূ কথা বলতো। এখন বছরে ২ থেকে ৩ কোটি টাকার পোনা মাছ বেচাকেনা হয়। তার এই হ্যাচারির রেণু পোনার মান ভালো হওয়ায় সারাদেশ থেকেই মাছ চাষিরা রেণু নিতে আসেন। সবকিছু বাদ দিয়ে বছরে আয় থাকে ১ থেকে দেড় কোটি টাকা। শুরুতে অনেকে অনেক কটূ কথা বললেও এখন তার এই সাফল্য দেখে খুশি স্থানীয়রা। পাশাপাশি ১০ থেকে ১৫ জনের কর্মসংস্থানও হয়েছে আমার এই হ্যাচারিতে।কিভাবে ডিম থেকে রেণু পোনা তৈরি করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রথমে মাছের শরীরে ইনজেকশন দিয়ে হরমোন পোস্ট করা হয়। এরপর হাপাতে রাখা হয়। হাপা থেকে বাচ্চা নিচে পড়ে গেলে তারপর সেগুলো চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন মৎস্য চাষিদের কাছে বিক্রি করেন। তবে এই মৎস্য হ্যাচারির পরিধি বাড়াতে সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতার দাবি জানান পিয়াল হোসেন।উপজেলার কোলা এলাকার যুবক খালিদ হোসেন মিলু বলেন, পিয়াল হোসেন খুব অল্প সময়ের মধ্যে এই হ্যাচারি থেকে ভাগ্য বদল করেছে।

স্থানীয়দের বেকার যুবকদের আইকন এখন পিয়াল হোসেন। তাকে অনুসরণ করে কেউ যদি এই কাজ করেন, তাহলে নিজেদের অর্থনীতি উন্নয়নের পাশাপাশি আরও বিভিন্ন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান সুযোগ হবে।নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বায়েজিদ আলম বলেন, যেসব বেকার, শিক্ষিত যুবক দেশীয় প্রজাতির মাছ উৎপাদন করতে আগ্রহী তাদেরকে হ্যাচারি স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা হয়। মানসম্পন্ন মাছের হ্যাচারি পরিচালনার ক্ষেত্রে মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে কারিগরি সহায়তা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও তারা যদি কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে উৎসাহী হয় তাদের পক্ষে সুপারিশ করা হয়ে থাকে ।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৪