নওগাঁ ‘বাউ চিকেন’ জাতের মুরগীর মুরগি পালন করে বাজিমাত উদ্যোক্তা ও খামারীরা

Daily Mukti Samachar - দৈনিক মুক্তি সমাচার: মার্চ ৮, ২০২৪

নওগাঁ ‘বাউ চিকেন’ জাতের মুরগীর মুরগি পালন করে বাজিমাত উদ্যোক্তা ও খামারীরা উজ্জ্বল কুমার সরকার, নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের উদ্ভাবিত নতুন জাতের মুরগী ‘বাউ চিকেন’ সাড়া ফেলেছে নওগাঁর বিভিন্ন এলাকায়। খেতে দেশি মুরগীর মতোই স্বাদ হওয়ায় বাড়ছে বাউ চিকেনের চাহিদা। গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক খামারও। নতুন জাতের এই মুরগী পালন করে বাজিমাত করেছেন বদলগাছী উপজেলার প্রান্তিক খামারী রেনুকা, শামিমা, রোকেয়া বেগমের মত অনেকেই । তাদের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন এলাকার আরও অনেকেই। দেশি মুরগীর দাম খুবই চড়া। অনেকেটা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে।

এমন বাস্তবতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কয়েক বছর আগে ‘বাউ চিকেন’ নামে নতুন একটি মুরগীর জাত উদ্ভাবন করেন। এই মুরগীর মাংসের স্বাদ অনেকটা দেশি মুরগীর মতোই। দেশীয় জলবায়ুর সাথে মানানসই বাউ চিকেন পালন করে সাড়া ফেলেছেন বদলগাছী উপজেলার কোমারপুর গ্রামের খামারী রেনুকা বেগম। চাহিদা বেশি থাকায় মুনাফাও হচ্ছে ভালো। বাউ চিকেন খামারী রেনুকা বেগম বলেন, “৪৫ দিনে এই মুরগী ৯শ’ গ্রাম থেকে ১কেজি ২০০ গ্রাম ওজন হয়। লাভও বেশি, দেশি মুরগীর স্বাদ আর এই বাউ মুরগীর স্বাদ একই রকম।” ব্রয়লার, সোনালী কিংবা পাকিস্তানী জাতের চেয়ে এই মুরগীতে রোগবালাই কম। ঔষুধও তেমন একটা লাগে না, রোগবালাই দেশি মুরগীর মতনই। এই জাতের মুরগী পুষে আমরা লাভবান হয়েছি। তাদের এলাকার আরও প্রায় ১৫ জন খামারী ইতিমধ্যে বাউ চিকেনের খামার গড়ে তুলেছেন সরকারের পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বাউ চিকেন পালনে খামারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা মৌসুমী পাশাপাশি পরামর্শ দিচ্ছে প্রাণিসম্পদ বিভাগও। দেশি মুরগীর চেয়ে বাউ চিকেনের দাম কিছুটা কম। নতুন জাতের এ মুরগী জেলার মাংসের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলছেন সংশ্লিষ্টরা মৌসুমীর প্রণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: নুর হোসেন বলেন, ‘ব্রাউ ব্রো বা বাউ মুরগী পালন করে আমার উপজেলায় অনেকই লাভের মুখ দেখেছে। ব্রয়লার মুরগী অনেকের কাছেই অপছন্দের, সেখানে বাউ মুরগী তাদের কাছে খুবই পছন্দের মুরগী হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে। খেতেও দেশি মুরগীর মতো স্বাদ।

আমি নিজেও অনেকগুলো খামার পরিদর্শন করেছি। এ মুরগীতে রোগ-বালাই খুবই কম হয়ে থাকে। উন্নত এ মুরগীর জাতকে ছড়িয়ে দিতে আমি কাজ করে যাবো। বদলগাছী প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নাজমুল বলেন, বদলগাছীতে বাউ মুরগী খামার বেড়েই চলেছে। এই মুরগী অল্প দিনেই অনেক ওজন হয়, এর মাংসের স্বাদ দেশি মুরগীর মতো, রোগ বালাইও কম হয়। বাজারে এর চাহিদা ও দাম খুবই ভালো হওয়ায় খামারিরা এখন বাউ মুরগী পালেনে ঝুকছে। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু তালেব বলেন, বাউ ব্রো জাতের মুরগী খেতে সুস্বাদু, মৃত্যুহার কম, উৎপাদন বেশি হওয়ার কারণেই খামারি ও ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদাও অনেক। এক কেজি খাবার খেলে এই মুরগী এক কেজি বৃদ্ধি পায়।

এই মুরগী দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সবখানে ছড়িয়ে দিতে সবাইকে কাজ করতে হবে। এই ক্ষেত্রে স্থানীয় এনজিও মৌসুমী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি পরামর্শ প্রদান করছে। তাই তাদের মতো অন্য এনজিওদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান রইলো।


যোগাযোগ: হয়বতপুর, নাটোর।
ই-মেইল: dailymuktisamachar@gmail.com