পুলিশ পদকের জন্য ৬৪ এসপিসহ ৫০০ নাম

Daily Mukti Samachar - দৈনিক মুক্তি সমাচার: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪

পুলিশ পদকের জন্য ৬৪ এসপিসহ ৫০০ নাম বিশেষ প্রতিবেদন, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং পুলিশ পদকের জন্য ৬৪ এসপিসহ ৫০০ নাম এবার পুলিশ সপ্তাহে পদকের জন্য প্রাথমিক তালিকায় ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারসহ (এসপি) বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৫০০ কর্মকর্তার নাম রয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে দু-এক দিনের মধ্যে তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। পুলিশ সদর দপ্তর ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সূত্রে এসব জানা গেছে। সূত্র বলেছে, ৬৪ জেলার এসপিরা পদক পেতে যাচ্ছেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘সুষ্ঠুভাবে’ অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করায়। পাশাপাশি আটকে থাকা কয়েক ব্যাচের পদোন্নতিসহ বেশ কিছু দাবিদাওয়াও পূরণ চান কর্মকর্তারা। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় ‘পুলিশ সপ্তাহে’ কর্মকর্তাদের পদক দেওয়া হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক জেলার এসপিরা বলেছেন, তাঁরা এই পুরস্কারের দাবিদার। কারণ, জাতীয় নির্বাচনে মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশমতো কাজ করেছেন এবং নির্বাচনের দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছেন। অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, সারা বছরের ভালো কাজের জন্য পুলিশ সদস্যরা পুরস্কার পেয়ে থাকেন। এবারও পুলিশ সপ্তাহে পাবেন। এখানে নির্বাচন বা অন্য কোনো বিষয় নেই। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তালিকা চাওয়ায় পুরস্কারের জন্য ৬৪ জেলার এসপিসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রায় ৫০০ কর্মকর্তার নামের প্রস্তাব পাঠিয়েছে সদর দপ্তর। সেবা, সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রতিবছর পুলিশ সপ্তাহে সম্মানজনক বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) ও প্রেসিডেন্ট পুলিশ পদক (পিপিএম) দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পরও পুলিশ সপ্তাহে সব জেলার এসপিকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। একই সঙ্গে র‍্যাবের ১৪টি ব্যাটালিয়নের অধিনায়কেরাও পেয়েছিলেন পুরস্কার। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। নির্বাচনে সারা দেশের ৪২ হাজার ২৫টি ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তাসহ সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখভালে বড় ভূমিকা পালন করে পুলিশ। নির্বাচনে বড় কোনো সহিংসতা হয়নি। পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র ইনামুল হক সাগর বলেন, ২৭ ফেব্রুয়ারি পুলিশ সপ্তাহ শুরু হচ্ছে। তবে কারা পুরস্কার পাবেন, এটা এখনো চূড়ান্ত হয়ে আসেনি। পুলিশের সূত্র বলেছে, পুলিশ সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সভা ও বার্ষিক কল্যাণ প্যারেডে বিভিন্ন পর্যায়ের দাবিদাওয়া জানাবেন পুলিশের সদস্যরা। ঝুলে থাকা পদোন্নতি সচল করতে তৎপরতা চালাচ্ছে বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনটি বলছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের বছরে ৭২০ জনের পদোন্নতি চাইলেও কয়েক ধাপে ৩৬৫ জন পদোন্নতি পেয়েছেন। এ ছাড়া গত রোববার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন ১৪ জন। তবে অনেক ক্ষেত্রে পদোন্নতি পেলেও পদ না থাকায় আগের পদেই দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। শুধু বেতনসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ছে। সর্বশেষ ১৪ জনের মধ্যেও ৪ জনকে নিয়মিত এবং ১০ জনকে ‘সুপারনিউমারারি’ (সংখ্যাতিরিক্ত) পদোন্নতি দেওয়া হয়। সূত্র বলেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুরস্কার হিসেবে পদক দেওয়ার কথা জানানো হলে পুলিশ সদর দপ্তর পদকের পাশাপাশি আটকে থাকা পদোন্নতি চেয়েছে। পুলিশ সপ্তাহের পর পদোন্নতির জট খুলে দেওয়ার দাবি জানানো হয়। শূন্য পদ না থাকলেও সংখ্যাতিরিক্ত পদোন্নতি দিয়ে ‘ইনসিটু’ (পদোন্নতির পরও আগের পদে দায়িত্ব পালন) করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সব জেলার এসপিরা পদক পেলে বিষয়টি কীভাবে দেখবেন, এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দিতে অপারগতা জানান পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। তিনি বলেন, ‘আসলে নির্বাচন ভালো করার জন্য কোনো পুরস্কার নেই। তবে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করার পুরস্কার আছে। ভালো ব্যবস্থাপনা, অতিরিক্ত ঝুঁকি নিয়ে যদি এসপিরা কাজ করে থাকেন বলে পুলিশ সদর দপ্তরের মনে হয়, তাহলে অবশ্যই প্রস্তাব দিতে পারে। কিন্তু পুরস্কার কতজনকে দেবে, সে সিদ্ধান্ত সরকারের।

যোগাযোগ: হয়বতপুর, নাটোর।
ই-মেইল: dailymuktisamachar@gmail.com