বাদল সন্ধ্যে

Daily Mukti Samachar - দৈনিক মুক্তি সমাচার: জুলাই ২, ২০২৪

বাদল সন্ধ্যে সাম্য শফিক  

তুমি চলে গেছো বসন্তকালে। বলেছিলে আসবে ফিরে, বৃষ্টির মরশুমে। তোমার আর ফিরবার সময় হলো না। সময়ের ট্রেনে চলে গেছে কতো আমাবস্যা পূর্ণিমা।

তুমি বৃষ্টি বিলাসী ছিলে। মনে পড়ে ? ত্রিপল ছাউনি দেয়া চায়ের স্টলের কথা। কতো কতো সন্ধ্যা কেটেছে সেখানে। কথা দিয়েছিলে, যেখানেই থাকো, ফিরে ফিরে আসবে।

আজ এ বৃষ্টিতে তোমাকে মনে পড়ে। এমন বাসুটে সন্ধ্যায় তোমার আমার যৌবনের যৌথ উল্লাসে কি লাজ-লজ্জাহীন ছিলো আলিঙ্গন। ভুলতে চাইলেও ভুলা যায় না, রেশ থেকে যাবে আমরণ। আজ এই বৃষ্টিভেজা শিরশিরে সমীরণ।

কথা দিয়েছিলে গায়ে গায়ে লেপটে থেকে, বৃষ্টিভেজা বিকালে টং দোকানে চা খাবে। ত্রিপলের উপর বৃষ্টির ফোঁটার টাপুরটুপুর শব্দ শুনবে।

আসবে কি ? নাকি আসবে না ? সময় ছুটে যায় ঝড়ো হাওয়ার বেগে। হয়তো বসে আছো টিভি রিমোট হাতে নীল সোফাসেটে। আমার চশমার ফ্রেমে কবেকার জল এখনো একা থেকে গেছে। হয়তো দুজনের দেখা হবে বর্ষার বরিষে।

চলে গেছো তুমি সেই কবে। পুরনো কুটিরে জমে থাকা স্মৃতি এখনো টলটলে। ফিরবে কি-না জানিনা, তৃষ্ণার চাতক অপেক্ষা করে।

মেঘলা আকাশ, অবিরাম বৃষ্টি। ভেজা মাটির গন্ধ হবে না-কি? বলেছিলে ফিরে আসবে, বর্ষার বরিষে।

বলেছিলে চা খাবে, চৌরাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানে। আজও একা দাঁড়িয়ে চায়ের সাথে, সিগারেট ফুঁকে, দিন চলে যায় প্রহর গুনে গুনে। তোমার হয়তো এখন চা নয়, কফির পেয়ালা আর রিমোট হাতে। বৃষ্টির বদলে, মেতে আছো উরাধুরা গানে। পায়ে পা তুলে সুখের সংসারে।

তোমার কি মনে পড়ে, বৃষ্টিভেজা এমন বাসুটে সন্ধায়, ঠোঁটে ঠোঁট রেখে গাঢ় চুম্বনে ভরিয়ে দিয়েছিলে।

এখনো আমার রোজকার চায়ের তেষ্টা মেটে মেহনতী মানুষের ঠোঁটের লালা লেগে থাকা, আধ ধোয়া কাপে। এই বৃষ্টিভেজা বিকালে।

এখন তোমার হাই স্ট্যাটাস, ফেরা সম্ভব নয় সস্তার ফুটপাতে। আজও সেখানেই আছি অবিচল সস্তার হৃদয়ে নিকোটিন জমে জমে।

যদি কখনো মনে পড়ে, যদি কখনো ফিরে আসো, বৃষ্টিভেজা বিকালে চৌরাস্তার টং দোকানে। আমি না থাকলেও, সেই চায়ের কাপে আমার ঠোঁটের স্পর্শ পাবে।


যোগাযোগ: হয়বতপুর, নাটোর।
ই-মেইল: dailymuktisamachar@gmail.com