ঢাকা   ২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । ৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
চাঁদা না পেয়ে পণ্যবাহী ট্রাক থেকে মালামাল লুট  চাঁদাবাজকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী দিনাজপুরে এমকেপি’র উদ্যোগে আঞ্চলিক সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা পাইকগাছায় এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায়- ১৪ জন নিহত আহত- ৫৬ ধামরাইয়ে মাটি ব্যবসা কেন্দ্র করে হত্যা মামলার আট আসামির জামিন না মঞ্জুর ঝালকাঠিতে রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাস এর ৭০তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত করিমগঞ্জে চাঞ্চল্যকর হুমায়ূন হত্যার ৩ আসামি আটক, হত্যার রহস্য উন্মোচন কুষ্টিয়ায় বেশি দামে ডিম ও মুরগী বিক্রির অপরাধে জরিমানা ঠাকুরগাঁও এ অভিযোগের ৮ দিনের মাথায় সমাধান দিলেন জেলা প্রশাসন  কলারোয়ায় যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত  ২০ নং ফোল্ডারের ১১ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র রাস্তার বেহাল দশা

রংপুর নগরীতে সময়ের পরিক্রমায় হারিয়ে যাচ্ছে বাঁশের শিল্পকর্ম

Md Bulbul Islam-35
  • প্রকাশিত : শনিবার, অক্টোবর ১৯, ২০২৪
  • 8 শেয়ার

সেলিম চৌধুরী, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি:

 

একসময় রংপুর জেলার প্রতিটি হাটবাজারে বাঁশের তৈরি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বেচাবিক্রি অনেক হতো। রংপুর সদর ও গঙ্গা চড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বাঁশের কারিগর বংশ পরম্পরায় বসবাস করতো । এরা বাঁশ দিয়ে খাঁচা,কুলা,ঝাঁকা, ঝাটা, হুচা, খালই, দাড়কি, চালুন সহ বিভিন্ন জিনিস পত্র তৈরি করে বিভিন্ন হাটবাজারে বেঁচে জীবিকা নির্বাহ করতো ।

বাঁশের কারিগর ছাড়াও বিভিন্ন গ্রামের কৃষক কৃষাণী অবসরে বাঁশ দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস বানিয়ে হাটবাজারে বিক্রি করে প্রয়োজনীয় বাজার সদাই করতো। কিন্তু আধুনিক যুগে প্লাস্টিকের বিভিন্ন জিনিসপত্র বাজারে পাওয়া যাওয়ায় এবং দাম তুলনামূলক ভাবে কম হওয়ায় মানুষ প্লাস্টিকের জিনিসপত্রের দিকে ঝুঁকে পড়েছে । বাধ্য হয়ে বাঁশের সাথে সম্পৃক্ত কারিগররা অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়েছে। গ্রামের কৃষকরাও আর অবসরে বাঁশ দিয়ে কোন কিছু তৈরি করে হাটবাজারে আনেন না । সামান্য যা চাহিদা আছে তা একশ্রেণীর মানুষ প্রত্যন্ত এলাকায় ঘুরে ঘুরে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র সংগ্রহ করে বেশি লাভে হাটবাজারে বিক্রি করছে ।

সারা রংপুর জেলায় এখন শুধু মাত্র বুড়ির হাট, লালবাগ,গঙ্গাচড়ায় কিছু বাঁশের কারিগর এই পেশা ধরে রেখেছে । বুড়ির হাট থেকে শ্যামল চন্ত্র মাত্র বিশটা দাড়কি এনেছে বিক্রির উদ্দেশ্যে । তিনি বলেন, ‘ আগে এই রংপুর জেলার প্রতি হাটে ৫০/৬০ টা দাড়কি বিক্রি করতাম । কিন্তু এখন চায়না জাল আর চায়না প্লাস্টিকের দাড়কি বাজারে আসার ফলে বিক্রি অর্ধেকেরও কম হচ্ছে । তাই কম পরিমাণে পন্য হাটে আনতে হচ্ছে ‘। এদিকে বাজারে বিভিন্ন কোম্পানির প্লাস্টিকের কুলা,ঝাটা , চালনা চলে আসায় এসব পণ্যের বিক্রিও কমে গেছে ।হারাটি গ্ৰামের মোঃ এরশাদ আলী বলেন, ‘ বেচাবিক্রি আগের চেয়ে অনেক কম। টেপারি, ঝাটা নিয়ে বসে আছি তো আছিই কাস্টমারের দেখা নাই। এভাবে চললে না খেয়ে মরতে হবে। ঝাটা ৬০ টাকা, টেপারি ২০০ টাকা বিক্রি করতে কষ্ট হয় ‘।

গঙ্গাচড়া উপজেলার বিনবিনিয়ার চড় থেকে আলি হোসেন নামের এক জন বাঁশের কারিগর বিশটা হুচা নিয়ে বুড়ির হাটে এসেছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে । তিনি বলেন , ‘ প্রতিদিন চার /পাঁচ টা হুচা তৈরি করা যায় , কিন্তু এগুলো আবার হাটে হাটে বিক্রি করতে হয় । প্রতিটা হুচা ৮০ টাকা বিক্রি করা যায় । এতো কষ্ট করে অল্প আয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। সরকারের কোনো পৃষ্ঠপোষকতা না পেয়ে বাঁশের এই শিল্প এখন টিকিয়ে রাখতে কারিগররা এখন হিমশিম খাচ্ছে। বাংলাদেশের গ্রামীণ ইতিহাস ঐতিহ্য ধরে রাখতে হলে বাঁশের শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এজন্য কারিগরদের সুযোগ সুবিধার দিকে খেয়াল রাখতে হবে ।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৪