ঢাকা   ১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । ২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বাংলাদেশ তৃণমূল সাংবাদিক ফোরাম (বিটিএসএফ) এর ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠিত বিলাইছড়িতে জীবন যুদ্ধে জয়ন্তী, আয়ের একমাত্র শেষ সম্বল সেলাই মেশিনটি বাংলাদেশ তৃণমূল সাংবাদিক ফোরাম (বিটিএসএফ) এর ৭ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত পুত্র সন্তানের বাবা হলেন দৈনিক মুক্তি সমাচার, নির্বাহী সম্পাদক মো: পিয়ারুল ইসলাম। নরসিংদীর আঃ হান্নান মানিক ঢাকা বিভাগের ডিভিশনাল অ্যাম্বাসেডর পদে পদোন্নতি। ৫৯ বিজিবি ভোলাহাট সীমান্তে হতে ১২ টি ভারতীয় চোরাই মোবাইল আটক গোপালগঞ্জ মুকসুদপুরে ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ অভিযান। পাইকগাছায় কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় খুলনা-৬ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিরুল হাসান বাপ্পি । ধর্ম নিয়ে ভন্ডামি মানুষ ধরে ফেলেছে, একমাত্র তারেক রহমানের হাতেই নিরাপদ দেশ- মীর শাহে আলম শাহবাগে প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১২০

স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা: জেলে বন্ধুর সাথে আলাপ, ২ বছর পর তথ্য ফাঁস

Dainik Muktir Songbad
  • প্রকাশিত : রবিবার, মার্চ ৩, ২০২৪
  • 102 শেয়ার

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি:

নাটোরে গুরুদাসপুরে স্ত্রীর সাথে দাম্পত্য দ্বন্দ্বের মামলায় জেলে গিয়েছিলেন মো. আল হাবিব সরকার (২৫)। সেখানে মনের দুঃখে বন্দি থাকা আরেক বন্ধুকে দুই বছর আগের এক ঘটনা বর্ণনা করেছিলেন তিনি। শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে সাথে নিয়ে স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক মফিজুল ইসলাম (২৫)কে হত্যার পর লাশ গুমের গল্প শুনিয়েছিলেন নতুন বন্ধুকে। সেই বন্ধু জেল থেকে মুক্তি পেয়ে বাইরে ফাঁস করে দেন সেই হত্যার ঘটনা।

এর পরেই চাঞ্চল্যকর ওই হত্যার ঘটনায় মো. আল হাবিব সরকার (২৫) এবং তার মামা শ্বশুর মো. আশরাফুল ইসলামকে (৪৮) গ্রেফতার করে র‍্যাব।

মফিজুল হত্যার তথ্য ফাঁসের পরেই ১ মার্চ শুক্রবার নিহতের মা বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় তিন জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও দুই জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ মামলার সূত্র ধরে ২ মার্চ শনিবার সকালে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম থানার গোলচত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আশরাফুল ইসলামকে আটক করা হয় বলে জানান, র‍্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সন্জয় কুমার সরকার।

অন্যদিকে, স্ত্রী মোছা. তানজিলা বেগমের ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে দায়ের করা দাম্পত্য কলহের মামলায় মো. আল হাবিব সরকারের জামিন হলেও স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিক মফিজুল ইসলামকে হত্যা মামলায় আবার গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান গুরুদাসপুর-সিংড়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আক্তারুজ্জামান।

২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে হত্যার পরে গুমকৃত মফিজুল ইসলামের (২৫) মরদেহ গুরুদাসপুরের পুরানপাড়া মাদ্রাসার পানির সেফটি ট্যাংকির পাশ থেকে উদ্ধার করা হবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।

হত্যা মামলায় গ্রেফতার মো. আল হাবিব সরকার (২৫) সিরাজগঞ্জের তাড়াশের তালোম কাচারিপাড়া এলাকার মো. ওজারত আলীর ছেলে এবং হাবিব সরকারের মামা শ্বশুর মো. আশরাফুল ইসলাম (৪৮) গুরুদুসপুরের খামাড়নাচকৈড় এলাকার মো. আব্দুস সামাদের ছেলে।

জানা যায়, নিহত মো. মফিজুল ইসলাম গুরুদাসপুরের চাঁচকৈড় খলিফাপাড়া এলাকার মো. আজাত মোল্লা ও মোছা. মাইনুর বেগম দম্পতির ছেলে।

মামলার বরাতে র‍্যাব-৫ নাটোর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার সন্জয় কুমার সরকার বলেন, ২০২৩ সালে নভেম্বরে আসামি আল হাবিব সরকারের সাথে স্ত্রীর তানজিলা বেগমের দাম্পত্য কলহের কারণে তানজিলা স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় জেলে যায় হাবিব। জেল হাজতে আল হাবিব সরকারের সাথে সেখানে থাকা আরেক বন্দি গুরুদুসপুরের খলিফাপাড়ার মো. মোজাফফর মুন্সির ছেলে মো. জাকির মুন্সির সাথে বন্ধুত্ব হয়। এক পর্যায়ে জেলখানায় নতুন বন্ধু জাকির মুন্সির কাছে হাবিব সরকার তার জীবনের নানা গল্প বলেন। তার মধ্যে স্ত্রীর পরকীয়ার ঘটনা এবং পরে সেই স্ত্রীর পরকীয়া প্রেমিককে হত্যা করে মরদেহ গুমের গল্পও বলেন।

হাবিব তার বন্ধুকে বলেন, স্ত্রী তানজিলা ও মফিজুল চাচকৈড় খলিফাপাড়ায় এক বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজের সময় পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এ বিষয়ে জানাজানি হলে হাবিবের শ্বশুর আবু তাহের খলিফা ওরফে তারা খলিফা (৫৫) তানজিলার প্রেমিক মফিজুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে খুন করার হুমকি দেন। এর পর ২০২২ সালের ১৭ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী তানজিলাকে চাপ দিয়ে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মফিজুলকে তার শ্বশুর বাড়িতে ডেকে আনেন।

বাড়িতে ডেকে আনার পর মো. আশরাফুল ইসলামসহ অন্য আসামিরা মিলে মফিজুলের মুখে কচটেপ লাগিয়ে দেয়। এরপর মাটিতে ফেলে আবু তাহের খলিফা মফিজুল ইসলামকে চেপে ধরে। তখন আশরাফুল মফিজুলের বুকের উপর পা তুলে ধারালো শাবল দিয়ে বুকে আঘাত করলে শাবল বুকের ভিতর ঢুকে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এরপর আসামিরা মফিজুল ইসলামের মৃতদেহ একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে বাড়ির পাশের মাদ্রাসার সেফটি ট্যাংকির পাশে মাটিতে পুঁতে রাখে।

হাবিবের বন্ধু জাকির মুন্সি গত সপ্তাহে জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে বিষয়টি মৃত মফিজুল ইসলামের মাসহ এলাকার অন্যান্য লোকজনের কাছে বলে দেয়। তারপরই চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় এলাকায়। পরে এ ঘটনায় মৃত মফিজুল ইসলামের মা বাদী গুরুদাসপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২৪