শরীফ আহম্মেদ, শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার শেরপুরে স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছেন সুমি আক্তার রনি (৩০) নামের এক গৃহবধূ। ১লা মার্চ শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের জয়লা আলাদি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে পলাশ রায়হানের (৩২) বাড়িতে এ অনশনে বসেছেন ওই গৃহবধূ সুমি আক্তার রনি।
বিবাহ নিবন্ধন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একই ইউনিয়নের গুয়াগাছি গ্রামের আবু তাহেরের মেয়ে সুমি আক্তার রনির সাথে পার্শ্ববর্তী জয়লা আলাদি গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে পলাশ রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ২০১৮ সালে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্কের ২ বছর পর দুজনের সম্মতিতে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে তারা ঢাকার একটি কাজি অফিসে গিয়ে বিয়ে সম্পূর্ণ করে। নববধূ সুমি আক্তার রনিকে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে বলে স্বামী পলাশ রায়হান। পরে পলাশ রায়হান তার স্ত্রী সুমি আক্তার রনিকে নিয়ে শেরপুরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। এভাবে প্রায় ৩ বছর ধরে তারা সংসার করে আসছিলেন। হঠাৎ পলাশ রায়হানের একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকরি হওয়ার সুবাদে তিনি শেরপুর হতে ঢাকায় চলে যান। তখন পলাশ রায়হান তার স্ত্রী সুমি আক্তার রনিকে বগুড়ায় একটি মেসে উঠিয়ে দেয়। ইতিমধ্যে পলাশ রায়হানকে বাড়ি থেকে বিয়ের জন্য চাপ দেয় তার পরিবার৷ তখন পলাশ রায়হান গোপনে কোর্টের মাধ্যমে সুমি আক্তার রনিকে তালাক দেয়। সুমি আক্তার রনি তালাকের বিষয়টি জানার পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারী স্বামী পলাশ রায়হানের বাড়িতে এসে অনশনে বসে। পরে বিষয়টি স্থানীয় মাতব্বর ও জনপ্রতিনিধিদের জানালে তারা শালিসি বৈঠকের মাধ্যমে সুমি আক্তার রনিকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে পুনরায় শুক্রবার সালিসি বৈঠক বসার জন্য দু’পক্ষকে জানায়। পরে শুক্রবার বৈঠকে বসে মাতব্বর ও জনপ্রতিনিধিরা সুমি আক্তার রনিকে পলাশ রায়হানের মা বাবার হেফাজতে রাখেন। রিপোর্ট লেখাকালিন সময়ে সুমি আক্তার রনি পলাশ রায়হানের বাড়িতে অনশনে রয়েছেন।
এবিষয়ে পলাশ রায়হানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সাংসারিক মনোমালিন্যের কারণে ডিভোর্স দিয়েছি। বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনের সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ ব্যাপারে সুমি আক্তার রনি বলেন, স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে স্বামীর বাড়িতে অনশনে বসেছি। আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে তার ঘরে না তুললে আমার সাথে আনা বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে আমি আত্মহত্যা করবো। লোকমুখে শুনেছি আমার স্বামী আমাকে তালাক দিয়েছে। কিন্তু কোন পেপার আমি হাতে পাইনি।এটা আমার স্বামীর বাড়ি। এখান থেকে আমাকে কেউ জীবিত নিতে পারবে না। এ বাড়ি থেকে গেলে আমার লাশ যাবে।
এবিষয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহি অফিসার সুমন জিহাদি বলেন,বিষয়টি আমি অবগত হলাম। মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।