আব্দুস শহীদ শাকির
জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি
সিলেটের সীমান্তবর্তী উপজেলা জকিগঞ্জ থেকে এক বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)। আটককৃত ব্যক্তির নাম সেলিম আহমদ (৪৪), যিনি খলাছড়া ইউনিয়নের কাপনা গ্রামের মৃত আব্দুল খালিকের ছেলে।
পরিবার এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পক্ষ থেকে আটক হওয়া নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। পরিবারের দাবি, সেলিম আহমদকে মাছ ধরার সময় আন্তর্জাতিক সীমা লঙ্ঘন করে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিএসএফের দাবি, তাকে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ আটক করা হয়েছে।
সেলিম আহমদের পরিবার দাবি করেছে, গতকাল মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে জকিগঞ্জ উপজেলার খলাছড়া ইউনিয়নের বেউর এলাকার কুশিয়ারা নদীর বেড়িবাঁধে মাছ ধরার সময় সেলিমকে বিএসএফ আটক করে নিয়ে যায়।
সেলিমের চাচাতো ভাই লুৎফুর রহমান অভিযোগ করে জানান, ভারতে আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন যে বিএসএফ তাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর ব্যাপক নির্যাতন করেছে। বর্তমানে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় বিনা চিকিৎসায় ইষ্টিমার ক্যাম্পে রাখা হয়েছে এবং সেখান থেকে মাইজদী ক্যাম্পে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শফিউল আলম মুন্না আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও সেলিমের বর্তমান অবস্থান ও শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য দিতে পারেননি।
বিএসএফ এবং স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পের ভাষ্যমতে, সেলিম আহমদকে মাদক পাচারের অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
লোহারমহল বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার জহির আলম জানান, সেলিম আহমদ আন্তর্জাতিক সীমা লঙ্ঘন করে ইয়াবা আনতে গিয়ে আটক হয়েছেন। তিনি নিশ্চিত করেন, এ সময় বিএসএফ তার কাছ থেকে ২,২০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে এবং বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
তবে ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে ইয়াবা উদ্ধারের পরিমাণে বড় ধরনের গরমিল পাওয়া গেছে। আসামের শ্রীভূমি (সাবেক করিমগঞ্জ) জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে বিএসএফ ২২,০০০ (বাইশ হাজার) পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে বলে দাবি করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য আনুমানিক ৩ কোটি ৩০ লাখ রুপি। এ সময় একজন বাংলাদেশি মাদক পাচারকারীকে আটক করার দাবিও করা হয়।
এ বিষয়ে জকিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জহিরুল ইসলাম মুন্না বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিচ্ছি। এই বিষয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য দেওয়ার জন্য বিজিবি ভালোভাবে অবগত থাকতে পারে।”
এই ঘটনাটি সীমান্তে মাদক চোরাচালান এবং সীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আটককৃত সেলিম আহমেদের পরিবারের অভিযোগ এবং বিএসএফের দাবির সত্যতা যাচাইয়ের চেষ্টা চলছে।